আশা করি ভালো আছেন । আজকে অনেকদিন পর আরও একটি নতুন পোস্ট লিখতে বসলাম । আজকে আমরা সীতাকুণ্ডের দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে জানব ।
অনেকে হয়তো সীতাকুণ্ডের নাম শুনেছেন । কিন্তু কোথায় অবস্থিত জানেন না তাদের বলি ।
সীতাকুণ্ড কোথায় অবস্থিত
সীতাকুণ্ড বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত চট্টগ্রাম জেলার একটি উপজেলা ।
রাজধানী ঢাকা থেকে যার দূরত্ব প্রায় 219 কিলোমিটার ।
সীতাকুন্ড উপজেলায় দেশের প্রথম ইকোপার্ক অবস্থিত । এছাড়াও বিকল্প শক্তি প্রকল্প ( বায়ু শক্তি এবং ভূ-তাপীয় শক্তি প্রকল্প ) অবস্থিত।
এখানে বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প রয়েছে ।
সীতাকুণ্ডের দর্শনীয় স্থান
আসুন এবারে সীতাকুণ্ড জেলার সেরা ২০ টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানা যাক,
- সোনাইছড়ি ট্রেইল
- ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল
- বাওয়াছড়া লেক
- হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল
- বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত
- সহস্রধারা ঝর্ণা
- সুপ্তধারা ঝর্ণা
- গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
- সীতাকুন্ড ইকোপার্ক
- মহামায়া লেক
- চন্দ্রনাথ পাহাড়
- নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও ট্রেইল
- কমলদহ ঝর্ণা
- ছোট দারোগার হাট স্বহস্রধারা
- বাঁশবাড়ীয়া সমুদ্র সৈকত
- ভাটিয়ারী লেক
- সম্ভুনাথ মন্দির
- সীতাকুন্ড চন্দ্র নাথ মন্দির
- সীতাকুন্ড সমুদ্র সৈকত
- কুমিরা ফেরিঘাট
সোনাইছড়ি ট্রেইল
অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের কাছে চট্টগ্রামের সোনাইছড়ি ট্রেইল একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান । এই ট্রেইলের মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের অসংখ্য বুনো পাথর । যা ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের বিষয় ।
ট্রেইল দিয়ে যাওয়ার পথে যেসব জিনিস চোখে পড়বে সেগুলো হলো,
- খাড়া উঁচু পাহাড় ।
- বাদুজ্জাকুম ।
- পিচ্ছিল গিরিপথ।
- তিন্দুর মতো বড় বড় পাথর।
এই ট্রেলের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮ কিলোমিটার এবং এর শেষে রয়েছে অপূর্ব সোনাইছড়ি ঝর্না ।
যাওয়ার সময় পথের দুই পাশের উঁচু পাহাড়ের মধ্যে, বাঁদরের ডানা ঝাপটানো এক ভয়াবহ পরিবেশে সৃষ্টি করে । যা খুবই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা ।
ঢাকা থেকে যাওয়ার জন্য ছয় সায়দাবাদ, মহাখালী কিংবা ফকিরাপুলের বাসস্ট্যান্ড থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে চড়ে ফকিরহাট বাজার পর্যন্ত আসতে হবে । সেখান থেকে সিএনজি ,অটোতে করে বা পায়ে হেঁটে বড় পাথর আসতে হবে সেখান থেকেই এই ট্রেইলের শুরু ।
এখানে যদি আপনার রাত কাটাতে ইচ্ছা হয় তাহলে মিরসরাই বা সীতাকুন্ডে অনেক কম টাকায় নিম্নমানের হোটেল পাবেন । সেখানে থাকতে পারেন । অথবা ভালো কোন হোটেলের জন্য চট্টগ্রাম যেতে হবে । তবে এক দিনের ট্রিপ হওয়ায় এখানে রাত্রি যাপনের প্রয়োজন পড়ে না ।
সবচেয়ে ভালো হয় দলবদ্ধভাবে অনেকে একসাথে গেলে । বর্ষাকালে জায়গাটি একটু বিপদজনক হয় তাই সবধানতা অবলম্বন করা উচিত ।
ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল
সীতাকুন্ডের সুন্দর এবং অ্যাডভেঞ্চারাস ট্রেইল গুলোর মধ্যে আরো একটি হলো ঝরঝরি ঝরনা ট্রেইল । এই ট্রেইল ধরে এগিয়ে যেতে থাকলে আপনি খুব সুন্দর সুন্দর কিছু ক্যাসকেট এবং খুম দেখতে পারবেন ।
এই ট্রেইল ধরে এগোতে এগোতে সবার শেষে আসলে আপনি ঝরনাটি দেখতে পারবেন । ঝরনাটি দেখতে এতটাই সুন্দর যে ট্রেন ধরে হেটে আসতে আপনি যতটা ক্লান্ত হবেন, সেই ক্লান্তি এক মুহূর্তে কর্পূরের মত উবে যাবে ।
এই ট্রেইলটি খুব একটা কঠিন নয় । অনেক শিশু ও মহিলারাও এই ট্রেইলে যায় । তাই আপনি নিশ্চিন্তে এই ট্রেইল যেতে পারেন ।
- উচু নিচু পাথরের রাস্তা ।
- ছোট বড় পাহাড় ।
- অসংখ্য গাছের শিকড় ।
- খুম ।
- ক্যাসকেড ।
- বেশ কিছু ঝর্না ।
ঢাকা চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য
যে কোন বসে করে মিরসরাই এর পান্থাশীলা বাজারে আসতে হবে । মিরসরাই বাজার থেকে হেঁটে আপনি ট্রেনটি পর্যন্ত যেতে পারবেন । যাওয়ার জন্য এখান থেকে স্থানীয় মানুষদের সাহায্য নিতে পারেন ।
সীতাকুণ্ড এবং এর আশেপাশে কিছু বাজারে নিম্নমানের হোটেল দেখতে পারবেন । সেখানে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে থাকার রুম পাবেন । ভালো উন্নতমানের হোটেলের জন্য চট্টগ্রাম শহরে যেতে হবে ।
বাওয়াছড়া লেক
বাওয়াছড়া লেক যা স্থানীয়দের কাছে নীলাম্বর লেক নামেও পরিচিত । এই লেকটি বারমাসি ছড়ার পাশে অবস্থিত । তাই এর নাম রাখা হয়েছে বাওয়াছড়া লেক ।
লেকটির অবস্থান মিরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের ছোটকমলদহ বাজারের দক্ষিণে ঢাকা – চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১.৫ কিমি পূর্বে লেকের অবস্থান ।
এই লেকের সৌন্দর্য দেখে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ মুগ্ধ হয়ে যায় । ঝর্নার যত কাছে যাওয়া যায় । তার পানির শব্দে মন ভরে উঠে । দুই পাশে উচু উচু পাহাড়ের মাঝে উপর থেকে নিচে শীতল পানি অনবরত পড়ছে ।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ছোটকমলদহ বাজার থেকে দক্ষিণ পাশে ১.৫ কিমি পূর্বেদিকে লেকটির অবস্থান । চট্টগ্রাম থেকে ছোটকমলদহ লেকটির কাছে পৌঁছতে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট সময় লাগে ।
হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল
এখানে ঝর্নার পানি খেতে আসা হরিণদের শিকার করা হতো, তাই এর নাম রাখা হয় হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল । এই অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর ট্রেইল গুলোর মধ্যে একটি হলো এটি ।
হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইলে রয়েছে,
- হরিণমারা ।
- হাঁটুভাঙ্গা ।
- সর্পপ্রপাত ঝর্ণা ।
- বাওয়াছরার মুখ ।
এই অঞ্চলের সবচেয়ে সহজ ট্রেইল গুলোর একটি হলো এটি । সর্পপ্রপাত ঝর্ণা সহ এখানকার ঝর্না গুলো আকারে ছোট । তাই এদেরকে ক্যাসকেড বলা যায় ।
এই ট্রেইলের রুটের শুরুতেই রয়েছে নীলাম্বর লেক । সেটিও ক্যাম্পিং করার জন্য খুবই সুন্দর জায়গা ।
হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইলে যাওয়ার জন্য প্রথমে মিশরাইয়ের ছোট কমলদহ বাজারে যেতে হবে । ঢাকা থেকে চট্টগরামগামী বাস বা ট্রেনে এখানে আসতে পারবেন । ছোট কমলদহ বাজার থেকে ট্রেইলটি যেতে সময় লাগে ৪০/৫০ মিনিট ।
এখানে আসতে চাইলে বর্ষাকালে আসার চেষ্টা করুন । কেননা অন্যান্য সময় বেশি পানি থাকে না । আবার এখানে খুব একটা খাবারের দোকান নেই । তাই সঙ্গে খাবার নিয়ে আসবেন । চাইলে স্থানীয় কাউকে কিছু টাকার বিনিময়ে গাইড হিসেবে নিতে পারেন ।
বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত
প্রায় ৫ কিলোমিটার লম্বা বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত সীতাকুণ্ডের অন্যতম একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র । এই সমুদ্র সৈকত থেকে সূর্যাস্ত দেখতে খুবই অসাধারণ লাগে । আর এখানকার আরেকটি আকর্ষণের কেন্দ্র হল লোহার ব্রিজ । যা আপনি হেঁটেই পার হতে পারবেন ।
দর্শনার্থীরা সূর্যাস্ত এবং এই লোহার ব্রিজটি দেখার জন্য এখানে ভিড় করে । তাই বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে ভালোই ভিড় লক্ষ্য করা যায় ।
এছাড়াও শীতকালে গেলে, শীতের সকালে এই সমুদ্র সৈকতের আশেপাশে সদ্য গাছ থেকে পাড়া খেজুরের রস খেতে পারবেন
। এগুলো ছাড়া সমুদ্রের মাঝে স্পিডবোটে করে ঘোরার সুবিধা এখানে রয়েছে ।
ঢাকা থেকে এখানে যাওয়ার জন্য চট্টগ্রামগামী বাসে করে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে বাঁশবাড়িয়াতে নেমে যেতে হবে । সেখান থেকে সিএনজি বা অটো থেকে ২০ থেকে ২৫ টাকা ভাড়া দিয়েই আপনি বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে যেতে পারবেন ।
ট্রেনে আসতে চাইলে আপনাকে ফেনী স্টেশনে নেমে যেতে হবে । সেখান থেকে সীতাকুণ্ড আসতে হবে । তারপরে সীতাকুণ্ড থেকে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে যেতে পারবেন ।
সহস্রধারা ঝর্ণা
সীতাকুণ্ড ইকো পার্কের ভিতরে সহস্র সহস্রধারা ঝর্ণাটি অবস্থিত । এই ঝর্ণাটিতে সব সময় কম বেশি পানি থাকে । শীত মৌসুমে পানির পরিমাণ কমে গেলেও বর্ষাকালে এটি পানিতে পরিপূর্ণ থাকে ।
এর আশেপাশে আরও কয়েকটি ঝরনা রয়েছে । যার মধ্যে একটি হল সুপ্তধারা ঝর্ণা । এই ঝর্ণাগুলোর সৌন্দর্য মানুষকে খুবই বিমোহিত করে । এগুলো দেখার জন্য সারা দেশ থেকে মানুষ এখানে ছুটে আসে ।
এই ঝরনাটি চট্টগ্রাম এর সীতাকুন্ড ইকো পার্কের ভেতরে অবস্থিত । তাই প্রথমে আপনাকে সীতাকুণ্ড আসতে হবে সীতাকুণ্ড আসার জন্য বাস এবং ট্রেন রয়েছে । চট্টগ্রাম শহর থেকে সীতাকুণ্ড এর দূরত্ব প্রায় 40 কিলোমিটার ।
সীতাকুণ্ডে থাকার জন্য কিছু কম দামি মোটামুটি মানের হোটেল রয়েছে এবং খাওয়ার জন্য এরকম হোটেলে পাবেন ।তবে আপনি যদি ভালো কোন হোটেল চান, তাহলে চট্টগ্রাম মূল শহরে যেতে হবে ।
সুপ্তধারা ঝর্ণা
সহস্র সহস্রধারা ঝর্ণা থেকে একটু দূরেই সুপ্তধারা ঝর্ণাটি অবস্থিত । এই ঝর্ণাটি সীতাকুণ্ড ইকো পার্কের ভিতরে অবস্থিত । বর্ষা মৌসুম ছাড়াও এখানে পানি থাকে ।
কিন্তু এই ঝর্না গুলোর পরিপূর্ণ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে গেলে বর্ষাকালে যেতে হবে । বর্ষাকালে এগুলো পানি দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে ।
এই ঝরনাটি সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ রিজার্ভ ফরেস্টের ভিতরে অবস্থিত । তাই এখানে আসতে হলে আপনাকে প্রথমে সীতাকুণ্ড আসতে হবে । সীতাকুণ্ড আপনি ট্রেন অথবা বাসে করে আসতে পারবেন । সীতাকুণ্ডের জন্য সরাসরি ঢাকা থেকে ট্রেন এবং বাস রয়েছে ।
সীতাকুণ্ডে থাকার জন্য কিছু কম দামি মোটামুটি মানের হোটেল রয়েছে এবং খাওয়ার জন্য এরকম হোটেলে পাবেন ।তবে আপনি যদি ভালো কোন হোটেল চান, তাহলে চট্টগ্রাম মূল শহরে যেতে হবে ।
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত স্থানীয় মানুষদের কাছে মুরাদপুর বিচ নামে পরিচিত । এটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বাজার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । এই সৈকতে রয়েছে জলরাশি এবং কেওড়ার বন । কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে খাল । খালার দুই পাশে কেওয়ার সাদা শ্বাসমূল দেখা যায় । দেখতে অনেকটা ম্যানগ্রোভ বনের মত ।
এই সমুদ্র সৈকতে মানুষের আনাগোনা কম তাই এখানে নিলিবিলি পরিবেশ পাওয়া যায় ।
সীতাকুণ্ড রিসোর্ট / সীতাকুন্ড ইকোপার্ক
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ের সীতাকুণ্ড পাদদেশে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্ক অবস্থিত । এর মোটা আয়তন ১৯৯৬ যার মধ্যে এক হাজার একোর জায়গায় বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বাকি 996 একোর জায়গায় ইকো পার্ক এলাকা অবস্থিত ।
এই পার্কটিতে রয়েছে,
- বিরল প্রজাতির গাছপালা ।
- হাজারো রকমের নজরকাড়া ফুলের গাছ ।
- কৃত্রিম লেক ।
- নানা প্রজাতির জীববৈচিত্র্য।
- সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝর্ণা ।
- আরো রয়েছে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি ঝর্ণা ।
- পিকনিক স্পট ।
- বিশ্রামের ছাউনি।
মহামায়া লেক
বাংলাদেশের দ্বিতীয় সবচেয়ে বৃহত্তম হ্রদ হল মহামায়া লেক এটি চট্টগ্রামের মিরসরাইতে অবস্থিত । এর আয়তন প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটার এটি নিশ্চয়ই উপজেলার ঠাকুরদিঘী বাজার থেকে ২ কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত ।
চন্দ্রনাথ পাহাড়
প্রায় ৭০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট একটি পাহাড় হল চন্দ্রনাথ পাহাড় যা ভারতের ত্রিপুরা আসাম রাজ্যের মধ্য দিয়ে ফণী নদী ফেনী নদী পার হয়ে চট্টগ্রামের সঙ্গে মিশেছে এই পাহাড়ের পাদদেশে সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক অবস্থিত ।
নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও ট্রেইল
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পাহাড়ে অবস্থিত একটি জলপ্রপাত হলো নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা । এখানে মূলত ৩ টি ঝর্ণা রয়েছে । এগুলো হলো,
- কুপিকাটাকুম ।
- মিঠাছড়ি ।
- বান্দরকুম বা বান্দরিছড়া।
ঝর্ণাগুলোতে যাওয়ার যে গিরিপথ রয়েছে তাকে নাপিত্তাছড়া ট্রেইল বলে।
কমলদহ ঝর্ণা
কমলদহ ঝর্ণার (Komoldoho Jhorna) ট্রেইল মোটামুটি অপরিচিত একটা ট্রেইল।
কমলদহ ঝর্নার ট্রেইল টি একটি কম জনপ্রিয় ট্রেইল । এই ট্রাইলে বড় কমলদহ ঝর্ণা অবস্থিত ।
বড় কমলদহ ঝরনার উপরে আবার ৪-৫ টা বড় এবং মাঝারি ঝর্না রয়েছে । Upstream এ অনেকদুর এগুলে বামে ডানে দুইদিকেই ঝর্ণা আছে ।
সবচেয়ে উচু ঝর্নাটি ১২০ থেকে ১৪৯ ফুট উচু । এই ট্রাইলটি বর্ষাকালে খুবই বিপদজনক। তাই বর্ষার একদম শেষে যাওয়াটাই ভালো।
ছোট দারোগার হাট স্বহস্রধারা
ছোট দারোগার হাট ঝর্ণাটি সহস্র ধারা ঝরনা ২ নামেও পরিচিত। সহস্র ধারা ১ ঝর্ণাটি সীতাকুণ্ড ইকো পার্কের ভিতরে অবস্থিত। এর পথে আশেপাশে প্রচুর গাছ থাকায় ছায়ার মধ্যে দিয়ে আপনি সহজেই পায়ে হেঁটে এখানে আসতে পারবেন । সহস্র ধারা সেচ প্রকল্প বাঁধের কাছে হেঁটে পৌছাতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে ।
বাঁশবাড়ীয়া সমুদ্র সৈকত
চট্রগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত তেমনই পর্যকটকের জন্যে একটা আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে ।
এখানে রয়েছে,
- ঝাউ গাছের সারি ।
- খোলামেলা পরিবেশ ।
- জেগে উঠা সবুজ ঘাসের চর ।
- পিকনিক স্পট ।
বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত অপূর্ব সৌন্দর্য নিয়ে দর্শনার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছে ।
ভাটিয়ারী লেক
ভাটিয়ারী লেক চট্রগ্রাম সিটি গেট থেকে মাত্র ২০ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত।
ভাটিয়ারী লেক পাহাড়ের পাদদেশে থাকা জমে থাকা পানি থেকে সৃষ্টি হয়েছে ।
এখানে রয়েছে,
- সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত গলফ কোর্স ।
- ভাটিয়ারী সান সেট পয়েন্টে সূর্যাস্তের দৃশ্য ।
কুমিরা ফেরিঘাট
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অন্যতম একটি সুন্দর স্থান হলো কুমিরা ফেরিঘাট । এটি সাগর পাড়ে সময় কাটানোর জন্য একটি সুন্দর জায়গা । পড়ন্ত বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে সূর্য অস্তের খুবই সুন্দর দৃশ্য দেখা যায় ।
এখানে মূলত পারাপারের হিসাবে ব্যবহৃত হয় । এখানে রয়েছে পারাপারের জন্য বিশাল দৈর্ঘ্যের একটি ব্রিজ । দেখলে মনে হবে ব্রিজের অন্য প্রান্ত সমুদ্রের মাঝে গিয়ে শেষ হয়েছে ।
এই স্থানের প্রকৃতির জোয়ার ভাটার সাথে পরিবর্তিত হয় । সাগরের পানির গর্জন এবং ঠান্ডা বাতাস আপনার কাছে রোমাঞ্চকর মনে হবে । এখানকার অন্য প্রান্তে তারা হলে মনে হবে আপনি সমুদ্রের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন ।
সীতাকুন্ড ভ্রমণ খরচ
যেহেতু সীতাকুণ্ড বাংলাদেশের ভেতরেই অবস্থিত তাই এখানে খুব বেশি খরচ হয় না । মোটামুটি মানের বাজেটেই আপনি সীতাকুণ্ড সুন্দর ভাবে ঘুরে দেখতে পারবেন । আবার আপনার যদি বাজেট নিয়ে একটু সমস্যা হয় তবে একটু কম দামি হোটেলে থেকে এবং খাওয়া দাওয়া করে আপনি সুন্দর ভাবে টুর কমপ্লিট করতে পারবেন ।
সীতাকুণ্ড পাহাড়ের উচ্চতা
সীতাকুণ্ড পাহাড় শহরের পূর্ব পাশে চন্দ্রনাথ পাহাড় অবস্থিত যা প্রায় ১ হাজার ২০ ফুট উচু বা ৩১০ মিটার উঁচু । এছাড়াও এখানকার রাজবাড়ী টিলা এবং সাজেকঢালা টিলার উচ্চতা যথাক্রমে 900 ফুট এবং 801 ফুট ।
শেষ কথা
আশা করি আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি সীতাকুণ্ডের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা পেয়েছেন ।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড খুবই বৈচিত্র্যময় স্থান । এখানকার পাহাড়ে ঝরনা, সমুদ্র এবং পাহাড় রয়েছে । যা এখানে নানা ধরনের সুন্দর সুন্দর টিলা, ক্যাসকেট, ঝর্ণা ইত্যাদি সৃষ্টি করেছে ।
এরকম অন্যান্য নিত্যনতুন তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেলের জন্য আমাদের এই ব্লগটি ঘুরে দেখুন।
1 thought on “সীতাকুণ্ড দর্শনীয় স্থান সমূহ | Tourist spots in sitakunda”